শরীয়তপুরের চন্দ্রপুরে চাঞ্চল্যকর শিক্ষক আব্দুস ছামাদ আজাদ হত্যা মামলায় ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। খালাস দেয়া হয়েছে ৫ আসামিকে।
বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মনির কামাল এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- চাঁন মিয়া খান, নুরুজ্জামান খান, জাহাঙ্গীর মাতবর ও জুলহাস মাতবর।
২০১০ সালের ১৫ জানুয়ারি সদর উপজেলার লক্ষীরমোড় বাসস্ট্যান্ডে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় শিক্ষক আব্দুছ সামাদ আজাদকে। ১৭ জানুয়ারি তার স্ত্রী ফেরদৌসী আজাদ বাদী হয়ে তৎকালীন চন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মোল্লকে প্রধান আসামি করে ৩০ জনের বিরুদ্ধে পালং থানায় হত্যা মামলা করেন।
দীর্ঘ ৮ বছর মামলার অগ্ৰগতি না থাকায় ২০১৮ সালের মার্চে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
চারদিন ধরে নিখোঁজ ৩ ছাত্রী, চার শিক্ষক কারাগারে
নিখোঁজের চারদিনেও সন্ধান মেলেনি জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালের চরের দারুত তাকওয়া মহিলা কওমি মাদরাসার তিন ছাত্রীর। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক মাদরাসাটির মুহতামিম মো. আসাদুজ্জামানসহ চারজন শিক্ষককে আজ বুধবার একজন অভিভাবকের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সাতদিনের রিমান্ডের আবেদনসহ চার শিক্ষককে আদালতে হাজির করা হলে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে তাদেরকে জামালপুর জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
নিখোঁজ তিন ছাত্রীর পক্ষে এক ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আজ বুধবার সকালে ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ১০ এর (১) ধারায় ইসলামপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গত সোমবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক মাদরাসাটির মুহতামিম মো. আসাদুজ্জামানসহ চারজন শিক্ষককে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এর আগে, রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত থেকে ওই মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির তিনছাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। তাদের বয়স নয় বছর থেকে ১১ বছরের মধ্যে। আজ বুধবার পর্যন্ত তাদের কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ।
মামলার বাদীর অভিযোগ, গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি ওই মাদরাসায় গিয়ে তার মেয়েকে রাতের খাবার দিয়ে আসেন। পরের দিন রবিবার সকালে পুনরায় মেয়েকে সকালের খাবার দিতে গিয়ে জানতে পারেন তার মেয়ে ও তার দুই সহপাঠীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
আসামিরা তিন ছাত্রীকে পাচার করার উদ্দেশ্যে যৌন শোষণ ও বা অন্যান্য কোন অপরাধ সংঘটনের জন্য অপহরণ করে আটক রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন অপহৃতা ওই ছাত্রীর বাবা।
গ্রেপ্তার শিক্ষকদের মধ্যে দুজনের বাড়ি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায় এবং বাকি দুজনের বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায়।
তারা হলেন- শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ঝড়াকুড়া গ্রামের মৃত মোশারফ হোসেনের ছেলে মো. আসাদুজ্জামান (৩৩) ও একই উপজেলার পাইকুড়া গ্রামের মো. রুকনুজ্জামানের মেয়ে মোছা. রাবেয়া আক্তার (২০), জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার সিরাজাবাদ গ্রামের মো. মজিবর রহমানের ছেলে মো. ইলিয়াস আহমেদ (৩০) ও একই উপজেলার দরিয়াবাদ গ্রামের মো. ইসমাইল হোসেনের মেয়ে মোছা. সুকরিয়া (১৯)। ওই চারজন শিক্ষককে আসামিভুক্ত করা ছাড়াও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো চার-পাঁচজনকে এই মামলায় আসামিভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে, আজ বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তার চারজন শিক্ষককে জামালপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাহমুদুল হাসান। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করে আসামিদের জেলহাজতে আটক রাখার আদেশ দেন আদালত।
ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সুমন মিয়া কালের কণ্ঠকে জানান, ওই মাদরাসার তিন শিশু ছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার পর মাদরাসাটির মুহতামিম মো. আসাদুজ্জামানসহ চারজন শিক্ষককে সোমবার রাতে আটক করা হয়। তাদেরকে থানা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে নিখোঁজ ছাত্রীদের সম্পর্কে সন্তোষজনক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ এক ছাত্রীর বাবার দায়ের করা মামলায় আটক চার শিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
নিখোঁজ তিন শিশুর সন্ধানে পুলিশি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
Post navigation