সরকারি অর্থ আত্মসাতের মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের সঙ্গে আসামি করা হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদকেও। এই দু’জনের পাশাপাশি মোট ছয়জনকে আসামি করে সোমবার এ মামলার চার্জশিট অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার সকালে অর্থ অত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মামলায় আবুল কালাম আজাদসহ ৬জনকে আসামি করে চার্জশিট অনুমোদন দেয় কমিশন। চার্জশিটের অপর আসামিরা হলেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক আমিনুল হাসান, উপপরিচালক (হাসপাতাল-১) মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল-১) মো. শফিউর রহমান এবং গবেষণা কর্মকর্তা মো. দিদারুল ইসলাম।
লাইসেন্স নবায়নবিহীন বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং সম্পাদন ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে তিন হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষার কথা বলে তিন হাজার ৫০০ টাকা হিসেবে মোট ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণ করে আত্মসাৎ করে রিজেন্ট হাসপাতাল।
এছাড়াও করোনাকালে হাসপাতালটির চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের খাবার খরচ বরাদ্দ মাসিক চাহিদা হিসেবে এক কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আদায়ের অভিযোগ রয়েছে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
সবমিলে ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক হাসপাতাল পরিচালক আমিনুল হাসান, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ করিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০২০ এর ২৩ সেপ্টেম্বর মামলা করে দুদকের উপপরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। সেখানে বাদ পড়ে চুক্তিসম্পাদনে উপস্থিত থাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের নাম। প্রায় এক বছর পর মামলার তদন্তে সাবেক এই মহাপরিচালকে সম্পৃক্ত করে দুদক।
গত বছরের ৬ জুলাই করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে র্যাব উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে।
৭ জুলাই করোনা পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করে র্যাব।
তিন বছর পর দেশে ফিরলেন ভারতে পাচার হওয়া ৩৭ কিশোর-কিশোরী
দীর্ঘদিন কারাভোগের পর বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরছেন ভারতে পাচার হওয়া ৩৭ জন বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী। দালালের মাধ্যমে অবৈধ পথে এসব নারী পুরুষ বিভিন্ন সময়ে ভারতে যায়। আজ ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকালে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশ বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন।
এসব কিশোর-কিশারী ও শিশুর বাড়ি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়। তাদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। প্রায় তিন বছর আগে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে দালালরা তাদের ভারতে পাচার করে।
যশোরের একটি বেসরকারি সাহায্য সংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের প্রোগ্রাম কর্মকর্তা মুহিত হোসেন জানান, সংসারে অভাব অনটনের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন সময় ভালো কাজের কথা বলে এসব কিশোর-কিশোরী ও শিশুকে ভারতে পাচার করে দালালরা। পরে তাদের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হয়।
ভারতীয় পুলিশ পাচারকারীদের কাছ থেকে তাদের উদ্ধার করে আদালতে পাঠায়। সেখান থেকে তাদের আশ্রয় হয় ভারতীয় এনজিও সংস্থার শেল্টার হোমে। পরে তারা বাংলাদেশি কিনা তা যাচাই করা হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভারত সরকারের দেয়া বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তারা আজ দেশে ফিরেছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, সীমান্ত পথে বিভিন্ন সময়ে ভারতে পাচার হওয়া ৩৭ জন নারী, পুরুষ ও শিশুরা ভারত সরকারের দেয়া বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে আজ দেশে ফিরে এসেছে। ইমিগেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে পোট থানায় সোপদ করা হবে।