বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার জালিয়াঘাটা এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেণিকক্ষ ও ছাত্রীদের ওয়াশরুম দখল করে সপরিবারে বসবাস করছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো: ফেরদৌস।
রোববার বিকেলে সাংবাদকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহে গেলে মো: ফেরদৌস জানান, তিনি দীর্ঘ ছয় বছর ওই শ্রেণিকক্ষে বসবাস করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিন তালা বিশিষ্ট বিদ্যালয়টির দ্বিতীয় তালার পশ্চিম পাশের তিনটি শ্রেণিকক্ষ ও ছাত্রীদের ব্যাবহৃত ওয়াশরুম দখলে নিয়ে সপরিবারে বসবাস করছেন প্রধান শিক্ষক মো: ফেরদৌস। ওই তিনটি শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চ একত্রিত করে তিনি খাট বানিয়েছেন এবং কিছু বেঞ্চ একত্রিত করে অন্য মালামাল রেখেছেন। রান্নার জন্য বারান্দার এক পাশে চুলা বসিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর দুই জন শিক্ষার্থী ও ষষ্ঠ শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী জানান, শুরু থেকেই স্যার আমাদের শ্রেণিকক্ষগুলো আটকিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকছেন। ছাত্রীদের ওয়াশরুমটাও দখলে নিয়েছেন। ওই ছাত্রীরা ছেলেদের ওয়াশরুম ব্যাবহার করছে। তাছাড়া তার নির্ধারিত তিন থেকে চারজন ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া তাদের রুমে কেউ ঢুকতে পারে না। অনেক ছাত্রী ওই ওয়াশরুমে গেলে তার সামনেই রাখা খাটে স্যার থাকেন। তাই লজ্জায় ভেতরে যেতে পারেন না। আমরা কিছু বললে আমাদের মারধর ও টিসি দিয়ে দিবে বলে হুমকি দেন। তাই ভয়েও কিছু বলতে পারি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি শ্রেণিকক্ষগুলো দখল করে বসবাস করছেন। তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারে ম্যানেজ করেই এগুলো করেছেন। কেউ কিছু বললেও হয়রানির শিকার হতে হয়।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: ফেরদৌস শ্রেণিকক্ষ দখলের কথা স্বীকার করে সাংবাকিদের ধমক দিয়ে বলেন, আমি সব কিছু ম্যানেজ করেই ছয় বছর ধরে থাকছি। আপনারা নিউজ করে যা করার করেন, দেখি আমার কী হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তিনি অনেক বছর ধরেই শ্রেণিকক্ষ দখল করে এখানে পরিবার নিয়ে থাকেন।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমি জানি উনি বাসা নিয়ে থাকেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলেছি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মাদ আল মুজাহিদ জানান, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ডেকে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।