টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে প্রেমিকের কথা মতো না চলায় দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। বর্তমানে ওই ছাত্রী টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযুক্ত প্রেমিক হৃদয়কে (১৮) গ্রেফতার করেছে। হৃদয় উপজেলার ছয়আনী বকশিয়া এলাকার টেক্কা মিয়ার ছেলে। সোমবার (২৫ অক্টোবর) সকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত শনিবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঘরে ঢুকে বকশিয়া এলাকায় ওই স্কুলছাত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে প্রেমিক হৃদয়। তাকে উদ্ধার করে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর নানা বাদী হয়ে রোববার (২৪ অক্টোবর) হৃদয়কে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
আহত স্কুলছাত্রী জানায়, দুই বছর আগে বকশিয়া এলাকার হৃদয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন তাদের সম্পর্ক চলমান থাকার একপর্যায়ে দুই মাস আগে বিষয়টি দুই পরিবারের মধ্যে জানাজানি হয়। দুই পক্ষ মিলে সিদ্ধান্ত নেয় দুই বছর পর পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে দেবে। এ ব্যাপারে দুইজনের অভিভাবকই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন।
এর কিছু দিন যেতে না যেতেই প্রেমিক হৃদয় স্কুলছাত্রীকে পড়ালেখা বন্ধ করে দিতে বলেন এবং তার অনুমতি ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রেমিকা তার কথা না শুনে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়াসহ স্বাধীনভাবেই চলাচল করতে থাকে।
এতে হৃদয় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে কথা না শুনলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এরপর থেকে হৃদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় স্কুলছাত্রী। এতে আরও ক্ষিপ্ত হন হৃদয়।
গত শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় হৃদয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রেমিকার ঘরে গিয়ে তাকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। পরে পরিবারের লোকজন এগিয়ে আসলে হৃদয় সেখান থেকে পালিয়ে যান।
গুরুতর আহত অবস্থায় ওই স্কুলছাত্রীকে প্রথমে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাহারুল ইসলাম সরকার জানান, এ ঘটনায় গতকাল রাতে অভিযুক্ত হৃদয়ের বিরুদ্ধে ওই স্কুলছাত্রীর নানা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। মামলা হওয়ার পর পরই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।