আগামী মাসে বেশ বড়সড় একটি গ্রহাণু পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সেটি প্রস্থে আইফেল টাওয়ারের উচ্চতার কিছুটা বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে আপাতত চিন্তার কিছু নেই।
গত কয়েক দশক ধরেই ‘৪৬৬০ নেরুস’ নামের গ্রহাণুটির গতবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন বিজ্ঞানীরা। সেটি ১৯৮২ সালে প্রথম খুঁজে পান মার্কিন জ্যোতির্বিদ এলিয়ানর হেলিন।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নেয়ার-আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজের (সিএনইওএস) তথ্য অনুযায়ী, ৪৬৬০ নেরুস আগামী ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ১১ মিনিটের দিকে পৃথিবীর সবচেয়ে ‘কাছাকাছি’ থাকতে পারে। সে সময় গ্রহাণুটি ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৭০০ মাইল বেগে ধেয়ে যাবে।
এখানে বলে রাখা ভালো, মহাকাশের ‘কাছাকাছি’ মানে আমাদের খুব কাছে নয়। ৪৬৬০ নেরুস পৃথিবীর ২৪ লাখ মাইল দূর দিয়ে চলে যাবে; যা পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বের ১০ গুণের বেশি। সুতরাং চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।
নাসা তবু সেটিকে ‘আশঙ্কাজনকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ গ্রহাণু’র কাতারে ফেলেছে। বিশেষ করে গ্রহাণুটির আকার পৃথিবীর ‘পাশ কাটিয়ে’ যাওয়ার গতিপথ জানার পর।
ডিসেম্বরের পর আরও একবার পৃথিবীর কাছাকাছি আসার কথা রয়েছে ৪৬৬০ নেরুসের। ২০৬০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সেটি আমাদের গ্রহের ৭ লাখ ৪৪ হাজার মাইল দূর দিয়ে চলে যাবে। সে দূরত্বও পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বের ঢের বেশি।
নিউজউইকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রহাণুটি প্রস্থে ৩৩০ মিটার বা ১ হাজার ৮২ ফুট হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা আইফেল টাওয়ারের প্রস্থের কিছুটা বেশি। ফ্রান্সের প্যারিসের দর্শনীয় টাওয়ারটি ৩২৪ মিটার উঁচু।
অবশ্য গ্রহাণুর পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া নতুন কোনো খবর নয়। প্রতিদিনই এমনটা হচ্ছে। হয় সেগুলো আকারে উল্লেখযোগ্য নয়, কিংবা অনেক দূর দিয়ে যায় বলে নজর কাড়ে না।
আকারে ১০০ মিটার বা তার চেয়ে বড় গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত হেনে ক্ষতি করবে, এমনটা প্রতি ১০ হাজার বছরে একবার হতে পারে বলে মনে করা হয়। আর গ্রহাণুর আঘাতে বড়সড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আরও অপ্রতুল।
৭ নভেম্বর পর্যন্ত পৃথিবীর ‘নিকটবর্তী’ প্রায় ২৭ হাজার গ্রহাণু পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা, যেগুলোর হাজারখানেক এক কিলোমিটার বা তার বড় বলে মনে করা হয়।